যত্ন
স্বাস্থ্যবান, রোগ-মুক্ত আলু বীজের আলুর সফল উৎপাদনের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব রয়েছে। যে সময় গাছের ঝোপালো অবয়বের বিকাশ হতে থাকে (রোপনের মোটামুটি ৪ সপ্তাহের মাথায়) তখনই আগাছা নির্মূল করা প্রয়োজন যাতে গাছের বৃদ্ধি ভালোভাবে হতে পারে। মাটি খুঁড়ে নীচের মাটি উপরে তুলে দেওয়ার কাজটা প্রতি ১৫-২০ দিন অন্তর করলে আগাছার বৃদ্ধি সীমিত হয় এবং মাটিও আলগা থাকে। যেহেতু আলু গাছের উচ্চ মাত্রায় পুষ্টি দরকার, তাই সবুজ সার ব্যবহার করার পরামর্শ রয়েছে। আলু গাছের অগভীর মূলতন্ত্র থাকার কারণে, হালকা জলসেচ করলেই যথেষ্ঠ। ফসল তোলার পরে, আলু ছায়াতে রেখে ১০-১৫ দিন ধরে শুষ্ক করা উচিৎ যাতে ত্বকের ক্ষতি সারিয়ে তোলা যায়। একটি ফসলের মধ্যে অন্য ফসলের চাষ হিসাবে আলুকে আদর্শ গণ্য করা হয়, বিশেষ করে আখ, মৌরি, পেঁয়াজ, সর্ষে, গম, বা তিসি চাষের সঙ্গে আলুর চাষ করা যেতে পারে।
মাটি
আলু লবণাক্ত ও ক্ষারধর্মী মাটি ছাড়া প্রায় অন্য যে কোন মাটিতে জন্মাতে পারে। যে মাটি প্রাকৃতিকভাবে আলগা ও কন্দের বৃদ্ধির জন্য সবথেকে কম বাধা সৃষ্টি করে, সেই মাটি আলু চাষের জন্য পছন্দ করা হয়। দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ ও উত্তম জল নিষ্কাশন ও বায়ু চলাচল ক্ষমতাসম্পন্ন, ফলে এই মাটি আলু ফসলের চাষের জন্য সবথেকে উপযোগী। যে মাটিতে pH ৫.২ থেকে ৬.৪ সীমার মধ্যে অবস্থান করে সেটিকে আদর্শ বলে ধরে নেওয়া হয়।
জলবায়ু
আলু নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার ফসল, যদিও এটি বিভিন্ন ধরনের আবহাওয়াজনিত অবস্থায় বেড়ে উঠতে পারে। এটি কেবলমাত্র সেই সমস্ত স্থানে বেড়ে ওঠে যেখানে বৃদ্ধি মরশুমের তাপমাত্রা পরিমিতভাবে শীতল থাকে। গাছের অঙ্গজ বৃদ্ধি ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবথেকে ভালো হয় কিন্তু কন্দের বিকাশের জন্য ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অনুকূল হয়। ফলে, আলু পাহাড়ী অঞ্চলে গ্রীষ্মের ফসল হিসাবে চাষ হয় এবং ক্রান্তীয় ও উপ-ক্রান্তীয় অঞ্চলে তা শীতের ফসল হিসাবে চাষ হয়। সমুদ্রতল থেকে ৩০০০ মিটার উঁচুতেও এই ফসলের চাষ করা যেতে পারে।