যত্ন
পেঁয়াজ একটি কষ্টসহিষ্ণু ও শীতল মরশুমের দ্বিবর্ষজীবি ফসল কিন্তু সাধারণত একবর্ষজীবি ফসল হিসাবেই এর চাষ করা হয়। বসন্তের শুরুতেই পেঁয়াজের চারা রোপন করা হয়, এবং শরৎকালে যখন এদের উপরিভাগ শুকিয়ে যেতে শুরু করে তখন ফসল সংগ্রহ করা হয়। পেঁয়াজকে বিভিন্ন গঠন, আকার ও রঙের হতে দেখা যায়। ছোট কন্দ আকৃতির পেঁয়াজ রোপন করে চাষ করলে যে ফলন পাওয়া যায় তা বীজ বপন করে বা অন্যত্র রোপন করে পেঁয়াজের ফলনের তুলনায় অনেক বেশী হয় কারণ বীজ বপন বা অন্যত্র রোপন করে যে পেঁয়াজ পাওয়া যায় তার তুষারপাতজনিত ক্ষতির সম্ভাবনা বেশী থাকে।
মাটি
পেঁয়াজের চাষ লাভজনক হওয়ার জন্য মাটিকে হতে হবে গভীর, সহজে ভঙ্গুর হয় এমন দোআঁশ ও পাললিক মাটি এবং সেইসঙ্গে জমিতে যাতে জল জমে না থাকে তার জন্য সুন্দর নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে, মাটির ভালো আর্দ্রতা ধারণ ক্ষমতা থাকবে ও মাটি হবে পর্যাপ্ত জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ। যে ধরনের মাটিই হোক না কেন, মাটির সর্বোত্তম pH পরিসর হতে হবে ৬.০-৭.৫-এর মধ্যে, কিন্তু পেঁয়াজ মৃদু ক্ষারধর্মী মাটিতেও বৃদ্ধি পেতে পারে। শুধু দরকার পর্যাপ্ত সূর্যের আলো ও জমির ভালো নিষ্কাশন ব্যবস্থা। পেঁয়াজ গাছ উত্থিত মাটি বা অন্ততঃপক্ষে ৪ ইঞ্চি উঁচু ঢিবিযুক্ত মাটির সারিতে ভালো বৃদ্ধি পায়।
জলবায়ু
পেঁয়াজ নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে ভাল হয় কিন্তু বিভিন্ন জলবায়ুযুক্ত আবহাওয়াতেও বেড়ে উঠতে পারে যেমন, নাতিশীতোষ্ণ, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও অব-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু। সবথেকে বেশী ফলন পাওয়া যায় মৃদু ধরনের জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে যেখানে ঠাণ্ডা ও উত্তাপের চরমতম প্রকাশ দেখা যায় না এবং তৎসহ বৃষ্টিপাতের পরিমানও বেশী নয়, যাইহোক, পেঁয়াজ কিন্তু হিমশীতল আবহাওয়া সহ্য করতে পারে। ভালো বৃদ্ধির জন্য এর প্রায় ৭০% আপেক্ষিক আর্দ্রতার প্রয়োজন হয়। যে সমস্ত অঞ্চলে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমান ৬৫০-৭৫০ মিমি. ও বর্ষা মরশুমে সর্বত্র সমানভাবে বৃষ্টিপাত হয়, সেই সমস্ত অঞ্চলে এর ফলন ভালো হতে দেখা যায়। কন্দ যখন বৃদ্ধি পায় তখন অঙ্গজ বৃদ্ধির জন্য পেঁয়াজ ফসলের মৃদু উষ্ণতা ও দিনের আলো (আলোর সংস্পর্শকাল) কম হওয়ার দরকার এবং ফসল যখন পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় তখন এর উচ্চ তাপমাত্রা ও দিনের সময়কাল বেশী হওয়া প্রয়োজন হয়।