যত্ন
আঙুর কাষ্ঠল জাতীয় উদ্ভিদের ভিটিস গণের অন্তর্গত একটি ফল। গোটা পৃথিবীতে আঙুরের অনেক জাত আছে এবং এই ফলগুলি খাওয়া হয় বা অনেক ধরনের পণ্য উৎপাদন করতে ব্যবহৃত হয় যেমন মদ, জেলী, জ্যাম, আঙুরের রস, ভিনিগার, কিসমিস, আঙুর বীজের তেল ও আঙুর বীজ থেকে নিষ্কাশিত পদার্থ। বহু হাজার বছর ধরে মানুষ আঙুর চাষ করে আসছে এবং এখন সারা পৃথিবীতে এই আঙুর ফলের চাষ হয় এবং খাওয়া হয়।
মাটি
আঙুর বিভিন্ন ধরণের মাটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে কিন্তু এই ফলের চাষের জন্য সবথেকে আদর্শ হলো বেলে দোআঁশ মাটি। আঙুর চাষের জন্য দরকার মাঝারি ধরনের পুষ্টি সমৃদ্ধ মাটি। চাষের মরশুমের আগে মাটিতে নাইট্রোজেন ও পটাসিয়াম যোগ করলে তা নিম্ন মাত্রার পুষ্টি বর্তমান এমন মাটির ক্ষেত্রে উপযোগী হতে পারে। আঙুর সামান্য অম্লধর্মী মাটি যেখানে pH মাত্রা ৫.৫ থেকে ৭.০ পর্যন্ত থাকে সেখানে ভালো জন্মায়। উন্নত ধরনের জল নিষ্কাশন সম্পন্ন মাটি আঙুরের মূল তৈরী হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এছাড়াও তা ফসলের রোগ প্রতিরোধ করে।
জলবায়ু
মৃদু শীতকালীন আবহাওয়াতে আঙুরের চাষ সবথেকে ভালো হয় এবং বৃদ্ধিকালীন সময়ে দীর্ঘ, উষ্ণ আবহাওয়া দরকার। আঙুরের জন্য প্রতি বছর ৭১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়। অতিবৃষ্টি বা অত্যন্ত কম বৃষ্টিপাত উভয়েই এই ফলের চাষের পক্ষে ক্ষতিকারক। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল আঙুর চাষের জন্য খুবই বিখ্যাত কারণ এই অঞ্চলে আঙুরের বৃদ্ধিকালীন সময়ে আপেক্ষিকভাবে একইরকম আবহাওয়া অর্থাৎ উষ্ণ ও শুষ্ক তাপমাত্রা বজায় থাকে। দ্রাক্ষালতার শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া শুরুর জন্য অন্ততপক্ষে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার দরকার হয়। উৎপাদনের সময় তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, এবং অন্যান্য আবহাওয়াজনিত বিষয়গুলি আঙুরের গন্ধ কেমন হবে তার উপর প্রভাব ফেলে। এটি বিশেষ করে মদ শিল্পের ক্ষেত্রে দেখা যায় যেখানে অঞ্চলগত আবহাওয়াজনিত পার্থক্য চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত পণ্যের স্বাদের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। এছাড়াও, কিছু আঙুরের জাত নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল ও আবহাওয়াজনিত বলয়ে খুব ভালো চাষ হয়।