যত্ন
চারা রোপনের আগে মাটিতে ভালো করে চাষ দেওয়া দরকার যাতে ন্যূনতম ৪৫০-৬০০ মিমি. গভীর গর্ত মাটিতে থাকে। জমি কর্ষণ করলে অবশিষ্ট মাটির উপাদান মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যায় এবং মাটির গঠনকে আরো উন্নত করে। নেমাটোড কৃমির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জমিতে রোপনের দুই সপ্তাহ আগে ধোঁয়া প্রয়োগ করা উচিৎ। বাঁধাকপির জন্য উচ্চ মাত্রায় পুষ্টি দরকার এবং প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ২০০-২৫০ কেজি. নাইট্রোজেন সার যোগ করা দরকার। সারের কয়েক ধাপে প্রয়োগ উচ্চ মাত্রায় ফলন ফলানোর জন্য উপযোগী। বাঁধাকপি সরাসরি বীজ বপন করে চাষ করা যায় বা চারাগাছ রোপন করা হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে মোটামুটি ২ কেজি. বীজ দরকার হয়। বীজ বপন বা চারা রোপনের অব্যবহিত পরেই জলসেচের প্রয়োজন এবং হালকা ধরনের মাটির জন্য প্রতি ৮দিন অন্তর জলসেচ দেওয়া প্রয়োজন যতক্ষণ পর্যন্ত না বাঁধাকপির মনোমত আকার হয়। যখন বাঁধাকপি সামান্য অপুষ্ট অবস্থায় থাকে তখন হাতে করে বৃন্তের গোড়া থেকে ফসল কেটে নিতে হয়। শীতল, আর্দ্র আবহাওয়াতে সংরক্ষণ বাঁধাকপি সংরক্ষণ করা উচিৎ।
মাটি
যদিও বাঁধাকপি প্রায় যে কোন ধরনের মাটিতে জন্মাতে পারে কিন্তু জল নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থাপনা থাকলে, দোআঁশ মাটি পেলে তা সতেজভাবে বেড়ে উঠতে পারে। উচ্চ মাত্রার বৃষ্টিপাত এবং জল নিষ্কাশন ক্ষমতা অত্যধিক বলে বেলে মাটি বাঁধাকপির চাষের জন্য পছন্দ করা হয়। যেহেতু বাঁধাকপি উচ্চমাত্রার আম্লিকধর্মী মাটির প্রতি বেশী সংবেদনশীল, আদর্শ pH মাত্রা হল ৫.৫ থেকে ৬.৫। বাঁধাকপির জন্য অনেক সংখ্যক পুষ্টির দরকার হওয়ায়, অত্যধিক জৈব সমৃদ্ধ মাটিকে চাষের জন্য পছন্দ করা হয়।
জলবায়ু
বাঁধাকপির জন্য শীতল ও আর্দ্র আবহাওয়া সবথেকে বেশী উপযোগী। যদি উচ্চ মাত্রার তাপমাত্রা বজায় থাকে, তখন ফলনের হার কমে যেতে পারে এবং তখন কীড়ার আক্রমণের প্রতি অধিক মাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। বৃদ্ধির জন্য সর্বোত্তম তাপমাত্রা হলো ১৮-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাঁধাকপি শীতল আবহাওয়াতে খুবই রোগ প্রতিরোধী হয় এবং ফসলের কোনরূপ ক্ষতি না করেই তা শূন্যের তিন ডিগ্রি নীচের তাপমাত্রাতেও দিব্যি বেঁচে থাকে। বাঁধাকপির অভিযোজন ক্ষমতা খুবই উচ্চ ধরনের এবং সারা বছর ধরেই বিভিন্ন অঞ্চলে তা জন্মে থাকে। প্রতিটি ফসলের জন্য ৩৮০ থেকে ৫০০ মিমি. পর্যন্ত জলের প্রয়োজন হতে পারে। ফসল বৃদ্ধির মরশুমে জল ব্যবহারের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।