যত্ন
সর্বোত্তম বৃদ্ধির জন্য কলার প্রভূত উষ্ণতার প্রয়োজন হয়। যদি প্রয়োজন হয়, অতিরিক্ত উত্তাপ পাওয়ার জন্য গাছকে কোন বড় বাড়ির পাশে বা অ্যাসফল্ট/ সিমেন্ট দিয়ে তৈরী ভবনের পাশে লাগাতে হয়। যেহেতু এই জাত প্রভূত পরিমানে জল ব্যবহার করে, গ্রীষ্মের আবহাওয়া বিরাজ করার সময়ে নিয়মিতভাবে গভীর জলসেচ করা প্রয়োজন। গাছকে শুকিয়ে যেতে দিলে চলবে না। অন্যদিকে, বিশেষ করে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় জমিতে জল দাঁড়িয়ে থাকলে তা মূলের পচন রোগের সূচনা করে। ঘন করে মালচ্ বিছিয়ে দিলে তা আর্দ্রতা ধরে রাখে। কলা গাছ খুব বেশী করে মাটি থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে এবং মাসে একবার ০.৫ থেকে ২ পাউণ্ড (বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে) সুষম সার কলা গাছের গোড়া থেকে ৪-৮ ফুট নীচে দেওয়া উচিৎ। কলা গাছ ঝোড়ো বাতাসের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে মাটির উপরে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ও সর্বাধিক ফলনের জন্য সুরক্ষা দরকার হয়। পরিপক্ক কলা গাছের চারিদিক ঘিরে নতুন কাণ্ড জন্মায়। প্রধান গাছের বৃদ্ধির সময় যতটুকু প্রাণশক্তির দরকার হয় তা যোগানের জন্য ঐ নতুন জন্মানো কাণ্ডগুলিকে ছেঁটে দেওয়া উচিৎ। যদি গাছ ফল ধরার খুব কাছাকাছি এসে যায়, কাণ্ডগুলিকে বাছাই করা চারাগাছ হিসাবে নির্বাচিত করার জন্য নেওয়া যেতে পারে (যখন অন্ততঃপক্ষে ৩ ফুট লম্বা হবে)। বীজও কলার চাষের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
মাটি
কলা গাছ প্রায় সব ধরনের মাটিতেই জন্মায়, কিন্তু ভালো ফসলের জন্য, গাছ গভীর, উত্তম জল নিষ্কাশন সম্পন্ন জংলী দোআঁশ মাটি, পাথুরে বালি মাটি, উর্বর মৃত্তিকা, লাল ল্যাটেরাইট, আগ্নেয়গিরির ছাই, বেলে মাটি, বা এমনকি ভারী মাটিতে তা চাষ করলে ভালো হয়। কলা গাছ ৫.৫ থেকে ৬.৫ pH যুক্ত আম্লিক মাটি বেশী পছন্দ করে। নোনা মাটি কলা গাছের পক্ষে সহনীয় নয়। কলা গাছের উত্তম বৃদ্ধির জন্য মূল যে চাবিকাঠি তা হলো মাটির উত্তম জল নিষ্কাশন ক্ষমতা থাকা। বৃষ্টির জলে ধুয়ে নামা নদী উপত্যকার মাটি কলা গাছের বৃদ্ধির জন্য আদর্শ।
জলবায়ু
কলা গাছের মোচা উৎপন্ন হওয়ার জন্য ১৫-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাযুক্ত ১০-১৫ মাস তুষারপাত বিহীন আবহাওয়া প্রয়োজন। যখন তাপমাত্রা ৫৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) নীচে নেমে যায় তখন কলার অধিকাংশ জাতের বৃদ্ধি স্তব্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে খুব উচ্চ তাপমাত্রায় যেমন ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় বৃদ্ধি সীমিত হয় এবং তাপমাত্রা যখন ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পৌঁছ যায় তখন সামগ্রিক বৃদ্ধি স্তব্ধ হয়ে যায়। উচ্চ তাপমাত্রা এবং চড়া সূর্যের আলো গাছের পাতা ও ফলকে ঝলসে দিতে পারে, যদিও কলা পূর্ণ সূর্যের আলোতে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। হিমশীতল তাপমাত্রা পাতার পক্ষে মারনকারক। ঝোড়ো বাতাসে ভেঙে পড়ার প্রতি কলাগাছ সংবেদনশীল।